অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারীদের জন্য আজ আমরা নিয়ে এসেছি ১০টি গোপন ফিচার। আজকাল প্রযুক্তির এই যুগে, অ্যান্ড্রয়েড ফোন শুধু কল করা, ইন্টারনেট চালানো বা মেসেজ দেওয়ার জন্য নয়, আরও অনেক কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়। তবে অনেক সময় ফোনের কিছু ফিচার ব্যবহারকারীদের অজানাই থাকে। যদি এসব ফিচার জানা থাকে, তাহলে দৈনন্দিন কাজগুলো আরও সহজ হয়ে যাবে।
১. Dual screen or Split Screen
মাল্টিটাস্কিং কথাটি নিশ্চয় আমরা সবাই শুনেছি। যারা জানে না, তাদের জন্য বলতে গেলে—মাল্টিটাস্কিং মানে একসাথে একাধিক কাজ করা। ঠিক এমনই কাজ করে Dual Screen বা Split Screen ফিচার। যার মাধ্যমে মোবাইল স্ক্রিনকে দুই ভাগে ভাগ করে একই সময়ে দুটি অ্যাপে কাজ করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, একদিকে নোট খোলা এবং অন্যদিকে ব্রাউজার বা মেসেজ অ্যাপ খোলা। এই ফিচার ব্যবহার করতে হলে প্রথমে মোবাইলের Recent Apps অপশনটি খুলতে হবে। এটি মুলত হোম বাটনের পাশে ছোট বর্গাকার বোতামে ক্লিক করলে দেখা যায়। এরপর আপনি যে অ্যাপটি Split Screen-এ খুলবেন, সেখানে ক্লিক করলেই স্ক্রিন স্বয়ংক্রিয়ভাবে দুই ভাগে ভাগ হয়ে যাবে।
২. Gestures
এই ফিচারের মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ধরনের জেসচার (gestures) ব্যবহার করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ, Mute on Pickup, যার সাহায্যে স্মার্টফোনটি টেবিল বা বিছানা থেকে তুললেই রিং বাজা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া ফোনের সেটিংসে gestures সার্চ করে আরও অনেক ধরনের জেসচার চালু করতে পারেন, যা আপনার ফোন ব্যবহারকে আরও সহজ ও স্মার্ট করে তুলবে।
৩. Digital Well-being
বর্তমানের প্রচলিত অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলিতে একটি ফিচার আছে, যার নাম Digital Well-being। এর মাধ্যমে আপনি দেখতে পাবেন ফোন ব্যবহারকালে দিনে কতটি নোটিফিকেশন এসেছে, কোন অ্যাপে কত সময় ব্যয় করছেন ইত্যাদি। ফলে, যারা অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন, তারা সহজেই নিজের ব্যবহারের মাত্রা বুঝতে পারবেন এবং এটি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে পারবেন।
৪. One Handed Mode
এই ফিচারের কাজ হলো, আপনি খেতে বসেছেন এমন সময় হঠাৎ করে আপনার ফোনে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাসেজ এলো তখন খাওয়া থেমে উত্তর দেওয়াও সম্ভব না, আবার বড় কি-বোর্ড এক হাত দিয়ে ব্যবহার করতেও সমস্যা হয়। এক্ষেত্রে সমাধান খুব সহজ: কি-বোর্ডের সেটিংসে গিয়ে One Handed Mode চালু করুন। তাহলে আপনার কি-বোর্ড ছোট হয়ে যাবে এবং এক হাতেই সহজে ব্যবহার করতে পারবেন।
৫. Screen Pinning
এই ফিচারের মাধ্যমে আপনি চাইলে যেকোনো একটি পেজ পিন করে রাখতে পারবেন। যার ফলে সেই পেজটি ছাড়া অন্য কোনো পেজে কেউ ঢুকতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি স্ক্রিন unpin না করছেন। এই ফিচারটি আপনি ফোনের Display অপশন থেকে সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন।
৬. Developer Option
ফোনের About সেকশন থেকে Build Number-এ কয়েকবার ক্লিক করলেইআপনি Developer Options আনলক করতে পারবেন। এরপর মেনুর ভিতরে গিয়ে বিভিন্ন সেটিংস পরিবর্তন করে আপনার ফোনটিকে নিজের মতো করে Customised Android হিসেবে সাজিয়ে রাখুন।
৭. Notification Bar
যখনই আমরা মোবাইলের ডাটা কানেকশন বা Wi-Fi অন/অফ করতে চাই, সাধারণত স্ক্রিন উপরে থেকে দুইবার নামাতে হয়। কিন্তু, যদি দুটি আঙুল ব্যবহার করা হয়, তবে একবার নামালেই পুরো নোটিফিকেশন বারের মেনুটি খুলে যাবে। দুইবার নামানোর প্রয়োজন হবে না। হয়তো অবাক লাগল শুনে, তবে এটি আপনার ফোন ব্যবহারকে আরও সহজ ও দ্রুত করবে।
৮. Dark Mode
বর্তমানের ফোনগুলিতে ডার্ক মোড ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে। আপনি যদি ডার্ক মোড প্রিয় হয়ে থাকেন এবং অ্যান্ড্রয়েড ১০ ব্যবহার করেন, তবে এই ফিচারটি আপনার জন্য খুবই উপকারী। Developer Options থেকে বিভিন্ন সেটিংস এক্সপ্লোর করার পর Override Force Dark অপশনটি চালু করলে আপনার ফোনের থিম পুরোপুরি ডার্ক মোডে চলে যাবে। এটি শুধু চোখের জন্য আরামদায়ক দেখাবে না, বরং ব্যাটারির চার্জও বাঁচাবে।
9. Hidden Drawing
অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ওপর ক্লিক করলে যে একটি পেজ আসে, তাতে আবার কিছুক্ষণ ক্লিক করার পরে একটা গেম চালু হয়, এ ফিচারের কথা অনেকেই জানেন। তবে যারা নতুন অ্যান্ড্রয়েড ৯ এ এটি খুঁজে বের করতে চান, তারা ফোনের সেটিংস থেকে অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন খুঁজে বের করবেন এরপর ভার্সন সংখ্যাটির উপর কয়েকবার ক্লিক করলেই "Android-Pie" এর ইন্টারফেস দেখা যাবে, সেই ইন্টারফেসে আবার কিছুক্ষন ক্লিক করলে আঁকা-আঁকির গোপন ফিচারটি চলে আসবে।
১০. App Icon Shortcut
ফোনের শর্টকাট ব্যবহার করতে কার-ই না ভালো লাগে। অনেক অ্যাপেই এই ধরনের শর্টকাট পাওয়া যায়। তবে App আইকনে কিছুক্ষন চেপে ধরে রাখলে নানান রকম শর্টকাট অপশন মোবাইল স্ক্রিনের ওপর ভেসে ওঠে। এতে অ্যাপের ভিতরে গিয়ে কাজ করার পরিবর্তে বাইরে থেকেই সহজেই সেই কাজটি করা যায়।