মোবাইল সিম ব্যবহারে অনিয়ম ও অপব্যবহার প্রতিরোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে একজন গ্রাহক তার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) ব্যবহার করে সর্বোচ্চ পাঁচটি সিম সক্রিয় রাখতে পারবে।
বর্তমানে যাদের নামে ছয় থেকে দশটি সিম নিবন্ধিত রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রেও ধাপে ধাপে সিমের সংখ্যা কমিয়ে সর্বোচ্চ পাঁচটিতে নামিয়ে আনা হবে। বিটিআরসি জানিয়েছে, মোবাইল সিমের অনিয়ম ও অপব্যবহার কমাতেই এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে মোবাইল ফোন অপারেটররা আগের মতোই আপত্তি জানিয়েছে।
বিটিআরসির দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত দেশে মোট মোবাইল সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৮ কোটি ৭৯ লাখ ৭০ হাজারে পৌঁছেছে। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা ৮ কোটি ৫৯ লাখ, রবি ৫ কোটি ৭৫ লাখ, বাংলালিংক ৩ কোটি ৭৯ লাখ এবং টেলিটকের গ্রাহক ৬৬ লাখ ৭০ হাজার। একই সময়ে দেশে মোট নিবন্ধিত সিমের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি ৬৩ লাখ, যার মধ্যে প্রায় ১৯ কোটি সিম বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে আর বাকি সিমগুলো নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে।
২০২৫ সালের গত আগস্টে এক ব্যক্তির নামে ১০টির বেশি সক্রিয় সিম থাকলে অতিরিক্ত সিম ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বাতিল বা মালিকানা পরিবর্তনের নির্দেশ দেয় বিটিআরসি। সংস্থার তথ্যমতে, সে সময় প্রায় ৬৭ লাখ সিম এক ব্যক্তির নামে ১০টির বেশি সক্রিয় অবস্থায় ছিল। পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে প্রায় ১৫ লাখ সিম গ্রাহক স্বেচ্ছায় বাতিল করেছেন। তবে এখনো আনুমানিক ৫০ থেকে ৫৩ লাখ সিম বাতিল করা হয়নি।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত সিম বাতিল করা না হলে সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরের মাধ্যমে সেগুলো ধাপে ধাপে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি। এ অবস্থায় গ্রাহকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, তারা যেন দ্রুত নিজেদের নামে নিবন্ধিত সিমের সংখ্যা যাচাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
সংক্ষেপে বলা যায়, বিটিআরসির দেওয়া নতুন নিয়ম অনুযায়ী একজন ব্যক্তি তার NID ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ৫টি সিম সক্রিয় রাখতে পারবে। যারা ইতিমধ্যেই একাধিক সিম তুলেছেন, বিশেষ করে ১০টির বেশি সিম রয়েছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সিমগুলো ধাপে ধাপে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সোর্স: বিটিআরসি