প্রতারণা থেকে বাঁচতে প্রয়োজন ইমেইল ব্যব‌হারে সচেতনতা

সোমবার, জুন 01 2020
একজন হ্যাকার
dhaka tribune


বর্তমানে ইন্টারনেটের দুনিয়ায় ই-মেইল খুবই পরিচিত একটি যোগাযোগ ব্যাবস্থা। ব্যাবস্যা-বানিজ্য, চাকুরীক্ষেত্র কিংবা শিক্ষা ব্যাবস্থায় দৈনন্দিন যোগাযোগের অন্যতম একটি মাধ্যম ইলেকট্রনিক মেইল বা সংক্ষেপে ই-মেইল। গুগল, ইয়াহু কিংবা মাইক্রোসফটের মত প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে গ্রাহকদের ই-মেইল ব্যাবস্থা ব্যাবহারের সুযোগ প্রদান করে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষার্থে কর্মীদের নিজেদের সার্ভারের মাধ্যমে ইমেইল সেবা প্রদান করে থাকেন। ২০১৮ সালের এক জরিপে জানা যায়, বিশ্বে প্রতিদিন প্রায় ২৮ হাজার ১০০ কোটি সংখ্যক ই-মেইল আদান-প্রদান করা হয় এবং ২০২২ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ৩৪ হাজার কোটি ছাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এই সংখ্যা থেকে বোঝাই যায় বিশ্বজুড়ে ই-মেইল ব্যাবস্থা কতটা জনপ্রিয়তা। তবে জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকলেও অতি গুরুত্বপুর্ন এই ব্যাবস্থায় গ্রাহকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে উল্লেখযোগ্য কার্যকরী কোনো ব্যাবস্থাই নেওয়া হয়নি। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, পৃথিবীজুড়ে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান ও ব্যাক্তি মুক্ত মাধ্যম হিসেবে ই-মেইল ব্যাবস্থায় যুক্ত থাকায় সচেতনতা ব্যাতীত গ্রাহকদের নিরাপত্তায় তেমন কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া সম্ভব নয়। তবে গ্রাহক সচেতনতায় খুব সহজেই ক্ষতিকর ই-মেইল এড়িয়ে চলা সম্ভব। চলুন দেখে নেওয়া যাক ক্ষতিকর ই-মেইল চিনতে পারার উপায় এবং এ ক্ষেত্রে ব্যব‌হারকারীদের করণীয়সমূহ।

একটি প্রতারণামূলক ইমেইলের নমুনা


১. অতি গুরুত্বপুর্ন ই-মেইল ঠিকানা ব্যাবহারে অবশ্যই নিজস্ব বিশ্বস্ত সার্ভারের অধীনে ই-মেইল ঠিকানা ব্যাবহার করা উচিত। গ্রাহকদের চাহিদা ও সংখ্যার হিসাবে এসব ই-মেইল সার্ভারে এন্টি-ভাইরাস এবং এন্টি-স্প্যাম সফটওয়্যার ব্যাবহার করা জরুরী। ই-মেইল ব্যাবহারের বিশ্বস্ত ৩য় পক্ষের সফটওয়্যার (যেমনঃ মাইক্রোসফট আউটলুক) ব্যাবহার করা যায় তবে সরাসরি ওয়েব সার্ভার থেকে ই-মেইল ব্যাবহার অধিক নিরপদ।

২. বিনামূল্যে ই-মেইল সেবা ব্যাবহারের ক্ষেত্রে অতি গুরুত্বপূর্ন, জরুরী, গোপনীয় কিংবা ব্যাক্তিগত সংবেদনশীল তথ্যাদি আদান প্রদান হতে বিরত থাকুন। বিনামূল্যে ব্যাবহৃত ই-মেইল সেবায় আপনার পাঠানো কিংবা গ্রহন করা সকল তথ্যই ই-মেইল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সার্ভারে জমা থাকছে। যা সেই প্রতিষ্ঠান যেকোনো সময়ে ব্যাবহার করার ক্ষমতা রাখে।

৩. যেকোনো অপরিচিত ব্যাক্তির ই-মেইল খোলার পূর্বে ই-মেইলের প্রেরক, শিরোনাম, সংযুক্তি ইত্যাদি তথ্যাদি যাচাই করে নিন। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে হ্যাকারদের বিশেষ ব্যাবস্থায় প্রেরিত বেনামী ই-মেইল খুলে দেখার ফলে বিভিন্ন দেশে জিমেইল গ্রাহকরা সাইবার অ্যাটাকের শিকার হচ্ছেন। এতে হ্যাকাররা গ্রাহকদের ইমেইলের তথ্যাদি সহ কম্পিউটার কিংবা মোবাইল ফোনের যাবতীয় ব্যাক্তিগত তথ্যও পেয়ে যাচ্ছে।

৪. আপনি অনলাইন লটারীতে ১ লক্ষ টাকা জিতেছেন! অর্থ সংগ্রহ করতে ইমেইলে আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য ও ব্যাংকের তথ্যাদি প্রেরণ করুন। এমন ই-মেইল বর্তমানে খুব সচরাচরই দেখা যায়। তবে এসব ই-মেইলের অধিকাংশই অনিরাপদ, স্প্যাম এবং মিথ্যা হয়ে থাকে। সতর্কতার সাথে এ ধরনের ই-মেইল স্প্যাম তালিকাভূক্ত করে ডিলিট করে দিন। ই-মেইলের স্প্যাম ফোল্ডারে থাকা অপ্রয়োজনীয় ই-মেইলও ডিলিট করে দিন। বিরক্তিকর ও প্রচারনামূলক ই-মেইল গ্রহন বন্ধ করতে ই-মেইলের প্রেরককে সেটিংস অপশন ব্লক করে দিন।

৫. আপনার ই-মেইল ঠিকানায় অপ্রয়োজনীয় ই-মেইল গ্রহণ কিংবা অসামাঞ্জস্য কোনো প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা মাত্রই ই-মেইল সেবাদান কারী প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করুন।


এ ক্ষেত্রে কোনো হুমকী বা ভয়ভীতির মুখোমুখি হলে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে তথ্য ও আইনী সেবার সাহায্য নিন।
share on