গ্রাহকদের উদ্বেগ দূর করতে বিটিআরসির নতুন বিজ্ঞপ্তি

সোমবার, আগস্ট 05 2019
গ্রাহকদের বিভ্রান্তি দূর করতে বিটিআরসির নতুন বিজ্ঞপ্তি!
BTRC


গত ২৯ জুলাই, অবৈধ-নকল-ক্লোন মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেট সংক্রান্ত এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে বিটিআরসি জানায়, এখন থেকে মোবাইল ফোন কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই যেন আইএমইআই যাচাই করা হয় ও রসিদ নেওয়া হয়। নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি আরও বলছে, সঠিক আইএমইআই ছাড়া মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেটে ভবিষ্যতে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছিল, আগস্টের ১ তারিখ থেকে নকল-ক্লোন আইএমইআই-র কোনো মোবাইল হ্যান্ডসেট যদি নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হয়, তাহলে পরবর্তী সময়ে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রারের (এনইআইআর) মাধ্যমে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।

সম্প্রতি মোবাইল ইম্পোটার্স অ্যাসোশিয়েশনের পক্ষ থেকে বিটিআরসিতে আইএমইআই সংক্রান্ত একটি ডেটাবেইস স্থাপন করা হয়েছে। সেটাতে বাংলাদেশের মোবাইল ফোন অপারেটরদের আমদানি করা সকল ফোনের আইএমইআই সংক্রান্ত তথ্য রাখা হচ্ছে। সেই সাথে, মোবাইল ফোন অপারেটরদের নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকা আইএমইআই-ও রাখা হচ্ছে সেখানে।

প্রসঙ্গত, বিটিআরসি’র অনুমোদনে প্রতিবছর বৈধভাবে প্রায় ২ কোটি ৭৬ লাখ হ্যান্ডসেট আসে বাংলাদেশে। অপরদিকে দেশের বাজারে থাকা সেটগুলোর ২৫-৩০% আসে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে। আর এতে করে বাংলাদেশ সরকার বছর বছর রাজস্ব হারাচ্ছে এক হাজার থেকে বারো শ কোটি টাকার মতো।

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়া রোধ করতে দেশের সকল হ্যান্ডসেটগুলোর আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি) নম্বর বিটিআরসির সেই ডেটাবেইসে সংরক্ষণ করা হবে।

আর মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানিকারকরা তাদের আমদানির অনাপত্তিপত্র পেতে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন এবং অনলাইনেই অনাপত্তিপত্র গ্রহণ করতে পারবেন। সাধারণ ব্যবহারকারী মোবাইল ফোন কেনার আগেই বিটিআরসির ডেটাবেইস থেকে সব তথ্য যাচাই করে সেটের বৈধতা নির্ণয় করতে পারবেন।

এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে দেশের সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে দেখা দেয় উদ্বেগ। এ বিষয়ে অনেকে স্যোশাল মিডিয়াতে নানান রকম মতও প্রকাশ করেছে! গ্রাহকদের উদ্বেগ দূর করতে, বিটিআরসি গত ৪ আগস্ট আরও একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বেশ কিছু বিষয় স্পষ্ট করেছে!

ওই বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, বিটিআরসির 'আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি) ডেটাবেইসে' শুধুমাত্র ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশে তৈরী হওয়া ও আমদানি করা সকল বৈধ মোবাইল হ্যান্ডসেটের তথ্য সংরক্ষিত করা আছে। বিদেশ থেকে কেনা, অবৈধ পথে আনা কোনো মোবাইল হ্যান্ডসেটের তথ্যই তাদের কাছে নেই।

এখন কারও মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেটের আইএমইআই বিটিআরসির 'আইএমইআই ডেটাবেইসে' নেই— এ মেসেজ পাওয়া প্রসঙ্গে বিটিআরসি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে, এই ধরনের কোনো মেসেজ পাওয়া মানেই যে আপনার মোবাইল সেটটি অবৈধ, তা কিন্তু নয়। বরং ১ আগস্ট ২০১৯ তারিখের পর কেনা কোনো মোবাইল ফোনে এ ধরনের মেসেজ পেলে তবে তা অবৈধ এবং সেটার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।

বিটিআরসিতে খুব শিগগিরই এনইআইআর সিস্টেম স্থাপন করা হবে এবং তখন থেকে অবৈধ সেটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।

পুরোনো মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেটের, বিটিআরসির 'আইএমইআই ডেটাবেইসে' রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজনীয়তা ও উপায় সম্পর্কে বিটিআরসি জানায়, ২০১৮ সাল থেকে সকল বৈধ মোবাইল ফোন সেটের তথ্য বিটিআরসির ডেটাবেইসে থাকায় আপাতত কোনো রেজিস্ট্রেশন লাগছে না। তবে এনইআইআর স্থাপন করা হলে ১ আগস্ট ২০১৯ এর আগের সব এবং পরে কেনা সব বৈধ সেটের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু হবে। এ ছাড়াও বর্তমানে কোনো মোবাইল ফোন সেট কেনা হলে তার রশিদ সংরক্ষণ করতে অনুরোধ জানিয়ে, রেজিস্ট্রেশনের সময় তা কাজে লাগবে, বলেছে বিটিআরসি।

আর বর্তমানে যেসব অবৈধ-নকল-ক্লোন মোবাইল সেট আগে থেকেই ব্যবহৃত হচ্ছে, সেগুলো এনইআইআর ব্যবস্থায় রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ পাবে। কিন্তু ১ আগস্ট ২০১৯ এর পর কেনা বৈধ সেট ছাড়া, কোনো অবৈধ-নকল-ক্লোন মোবাইল সেট রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ পাবে না!

বিদেশ থেকে আসা মোবাইল হ্যান্ডসেট বিষয়ে বিটিআরসি জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় দলিলাদি দাখিল সাপেক্ষে এনইআইআর ব্যবস্থায় রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ পাবে এবং ব্যবহারও করতে পারবে।
share on